SATT ACADEMY

New to Satt Academy? Create an account


or
Log in with Google Account

তখনকার হিসাবে বাংলাদেশের সাড়ে ৭ কোটি মানুষের প্রায় সকলেই মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে ছিল । তবে এদেশের মানুষের একটি ক্ষুদ্রাংশ আমাদের মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা ও দেশবাসীর স্বার্থের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করে। তারা পাকিস্তানি বাহিনীকে বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করে ।

পাকিস্তানের অখণ্ডতা রক্ষার নামে ও ধর্মের দোহাই দিয়ে এই স্বাধীনতা-বিরোধীরা পাকিস্তানি সৈন্যদের সঙ্গে মিলে হত্যা, লুট, অগ্নিকাণ্ড, নারী নির্যাতনসহ সারা দেশে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে । মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিকামী বাঙালি ও প্রগতিশীল বাঙালিদের খুঁজে বের করে তাদের তালিকা পাকিস্তানি বাহিনীর হাতে তুলে দেয়। তাদের অত্যাচার কখনো কখনো পাকিস্তানি বাহিনীর অত্যাচারকেও ছাড়িয়ে যেতো ।

মুক্তিযুদ্ধের সময় গড়ে উঠেছিল পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর বেশ কয়েকটি সহযোগী সংগঠন—

শান্তি কমিটি : ৯ই এপ্রিল গঠিত হয় ১৪০ সদস্যবিশিষ্ট 'ঢাকা নাগরিক শান্তি কমিটি'। এ কমিটির সদস্যদের মধ্যে ছিল মুক্তিযুদ্ধ-বিরোধী জামায়াতে ইসলামি, নেজামে ইসলামি, পিডিপি ও মুসলিম লীগ নেতারা। মধ্য এপ্রিলে গঠিত কেন্দ্রীয় শান্তি কমিটির কার্যক্রম জেলা, থানা এমনকি কোথাও কোথাও ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যন্ত প্রসারিত হয়। মূলত এরাই পাকিস্তানি বাহিনীকে পথ চিনিয়ে প্রত্যন্ত অঞ্চলে নিয়ে যায় ।

রাজাকার : মুক্তিযুদ্ধের সময় যুদ্ধরত পাকিস্তান সামরিক বাহিনীকে সহায়তার লক্ষ্যে জামায়াত নেতা মওলানা এ কে এম ইউসুফ পাকিস্তানপন্থী কর্মীদের নিয়ে ১৯৭১ সালের মে মাসে খুলনায় সর্বপ্রথম রাজাকার বাহিনী গঠন করেন । ১লা জুন লে. জেনারেল টিক্কা খান পূর্ব পাকিস্তান রাজাকার অর্ডিন্যান্স জারি করে একে পাকিস্তান বাহিনীর সহযোগী হিসেবে স্বীকৃতি দেন। ধীরে ধীরে সারা দেশেই রাজাকার বাহিনী গঠিত হয়। তবে এর নেতৃত্ব ছিল পাকিস্তানপন্থী স্থানীয় নেতাদের হাতে। সারা দেশে ঘৃণিত ও ধিকৃত এই বাহিনী হত্যা, অগ্নি সংযোগ, লুট এবং নারী নির্যাতনের মতো মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত।

আলবদর : আলবদররা ছিল সাক্ষাৎ যমদূত। জামায়াতে ইসলামি ছাত্র সংগঠন ইসলামি ছাত্র সংঘের ছাত্রদের নিয়ে এ বাহিনী গড়ে উঠে। ডিসেম্বর মাসের প্রথম দিকে পাকিস্তানি বাহিনী বুদ্ধিজীবী অপহরণ, নির্যাতন ও হত্যার যে পরিকল্পনা করে তা বাস্তবায়ন করে আলবদর বাহিনী।

আল-শামস : আল-শামস আলবদরের মতোই আরেকটি সংগঠন। মুসলিম লীগ ও অন্যান্য সাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক দলের ছাত্র সংগঠনগুলো সম্মিলিতভাবে আল-শামস বাহিনী গঠন করে। 

 

ডা. মালিক মন্ত্রিসভা 

পাকিস্তান সরকার বহির্বিশ্বকে বিভ্রান্ত করতে সামরিক গভর্নর জেনারেল টিক্কা খানকে সরিয়ে তার জায়গায় বেসামরিক ব্যক্তি ডা. আবদুল মোতালিব মালিককে গভর্নর নিযুক্ত করে । তার নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী তথাকথিত বেসামরিক সরকার ১৭ই সেপ্টেম্বর গঠিত হয়। ১০ সদস্যবিশিষ্ট মালিক মন্ত্রিসভা পাকিস্তানি সামরিক জান্তার পক্ষ নিয়ে মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে অবতীর্ণ হয় এবং বিভিন্ন বক্তৃতা-বিবৃতি ও নির্দেশের মাধ্যমে স্বাধীনতা-বিরোধী কর্মকাণ্ড অব্যাহত রাখে। ১৪ই ডিসেম্বর এ সরকার পদত্যাগ করতে বাধ্য হয় ।

কাজ : মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী বিভিন্ন দল ও সংগঠনের পরিচয় দাও।

Content added By
Promotion
Content for the offcanvas goes here. You can place just about any Bootstrap component or custom elements here.